‘‘বর্তমান রাজস্ব সংস্কৃতি ও ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল বিষয়ক’’ মত বিনিময় সভা
২৩ জানুয়ারি ২০১৮, দুপুরে রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র আয়োজনে ‘‘বর্তমান রাজস্ব সংস্কৃতি ও ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল বিষয়ক’’ মত বিনিময় সভা রংপুর চেম্বারের আরসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাস্টম্স, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, রংপুরের উপ-কমিশনার মোঃ ফখরুল আমিন চৌধুরী । 
রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, দেশের উন্নত ও অনুন্নত অঞ্চলে একই হারে ভ্যাট হার নির্ধারণ করা যুক্তিযুক্ত নহে। কেননা রংপুর বিভাগে গ্যাস নেই, অবকাঠামোগত সুবিধা নেই, বৃহৎ কোন শিল্প কলকারখানা নেই। কিন্তু বর্তমানে  জ¦ালানি খরচ, দোকান ভাড়া, হোল্ডিং ট্যাক্স, শ্রমিকের মজুরি, কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি সহ যাবতীয় খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসার মুনাফা অনেক কমে গেছে এবং ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণের বোঝা বাড়ছে। তাই তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি ভ্যাটের আওতা বাড়ানোসহ সহনীয় পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে ভ্যাট আদায়ের আহ্বান জানান। পরিশেষে তিনি দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকলকে ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 
সভায় বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে  থেকে বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজতোবা হোসেন রিপন,  কর, শুল্ক ও ভ্যাট এবং বিএসটিআই উপ-পরিষদের আহ্বায়ক ও রংপুর চেম্বারের পরিচালক মোঃ রিয়াজ শহিদ শোভন, রংপুর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ¦ আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি, রংপুর জেলা শাখার সভাপতি ও রংপুর চেম্বারের সাবেক পরিচালক মোঃ এনামুল হক সোহেল, নবাবগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রংপুর চেম্বারের সাবেক পরিচালক মোঃ আকবর আলী, রংপুর জেলা বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রংপুর চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ মামুনুর রশিদ মামুন, পেট্রোলিয়াম ডিলার্স এসোসিয়েশন, রংপুর জেলার সভাপতি ও রংপুর চেম্বারের সাবেক পরিচালক শাহ্্ মোহাম্মদ সেলিম, রংপুর জেলা পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মেট্রোপলিটন চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ গোলাম জাকারিয়া পিন্টু, রংপুর জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুল ইসলাম,  বঙ্গ কেবিনেট ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও আমদানিকারক মোঃ আমিনুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জুট প্রসেসিং এর ম্যানেজিং পার্টনার অরুপ কান্তি দত্ত।
মত বিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ  অগ্রসর ও অনগ্রসর এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন হারে ভ্যাট আদায়ের পাশাপাশি রংপুর বিভাগের বেকারী শিল্পকে ভ্যাটমুক্ত রাখা, স্লাবভিত্তিক ভ্যাট আহরণ, বঙ্গসোনাহাট স্থল বন্দরের সমস্যা নিরসন, ফিলিং স্টেশনে ভ্যাট আদায়ের পাঁয়তারা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, ভ্যাট আদায়ে তৃণমূল পর্যন্ত প্রচারনা করা, ভ্যাট প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি, নতুন নতুন ভ্যাটদাতা সনাক্তকরণ, ভ্যাট আদায়ে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ, জেলা ভিত্তিক ভ্যাট আদায়ের সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরা, খ্যাত ভিত্তিক ভ্যাট হার নির্ধারণ,ইট ভাটা শুরু আগেই অযৌক্তিক ভ্যাটের বোঝা ইত্যাদি বিষয়গুলো তুলে ধরে বিশদ আলোচনা করেন। বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিচ্ছে, ভবিষ্যতেও দিবেন তবে তা হতে হবে যৌক্তিক। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিতে ইচ্ছুক তবে ভ্যাট বা ট্যাক্স যাতে ব্যবসায়ীদের সহনীয় হারে যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে এবং প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদেরকে যাতে অহেতুক হয়রানীর শিকার হতে না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ রংপুরের উপ-কমিশনার মোঃ ফখরুল আমিন চৌধুরী চেম্বার নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করে বলেন যে,  ব্যবসায়ীরা অনলাইনের মাধ্যমে জটিলতা ও হয়রানি মুক্ত পরিবেশে নিজের ভ্যাট নিজেই প্রদান করতে পারবেন। এতে ব্যবসায়ীরা অনাকাঙ্খিত বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাবেন। এছাড়া ভ্যাটের পরিধি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা, উপজেলা ও তৃণমূল পর্যন্ত ভ্যাটের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং তা পর্যায়ক্রমে  সম্প্রসারিত হবে। তিনি ভ্যাট প্রদানের ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের পক্ষ থেকে সভা, সেমিনার, ইন্টারনেট, ই-পোর্টাল, সেলফোন ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভ্যাটদাতাদেরকে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন মর্মে উপস্থিত ব্যবসায়ীদেরকে আশ্বাস প্রদান করেন। 
মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ রংপুর এর কর্মকর্তাবৃন্দের মধ্যে মোঃ ফরিদুল আলম, মোঃ মজিবর রহমান, প্রভাষ কুমার বিশ^াস, হারাধন চন্দ্র পাল, রংপুর চেম্বারের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা ও পরিচালকবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিবৃন্দ, রংপুরের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ।