আগামী বাজেটে সহজ ও ব্যবসাবান্ধব আয়কর ব্যবস্থা, আয়কর ও ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি, কর ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অটোমেশন, স্থানীয় শিল্পায়ন উৎসাহিতকরণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণের উপর জোর দাবি জানিয়েছে রংপুর চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি (আরসিসিআই)।
২৪ ফেব্রুয়ারি,২০২৪ইং তারিখ সকালে রংপুর চেম্বারের আয়োজনে রংপুর বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভূক্তির লক্ষ্যে রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (আরসিসিআই)- এর সভাপতি মোঃ আকবর আলী আমদানি শুল্ক, মূল্যসংযোজন কর, আয়কর ও অন্যান্য কর সম্পর্কিত বিষয়ে ১০০টি প্রস্তাব উত্থাপন করে।
রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোঃ আকবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি) মোঃ মাসুদ সাদিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম।
প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি রেজা হুমায়ুন ফারুক চৌধুরী, নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি এস এম শফিকুল আলম ডাবলু, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মোঃ রেজাউল ইসলাম মিলন, রংপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি আনোয়ারা ফেরদৌসি পলি, লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ মোড়ল হুমায়ুন কবীর, গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুর রশীদ, কুড়িগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালক মাহমুদ নবী মুন্না, রংপুর চেম্বারের সাবেক সভাপতি মোঃ আবুল কাশেম, বিশিষ্ট সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু ও রংপুর জেলা বিড়ি মালিক সমিতির কৃষিবিদ মোস্তফা কামাল, ব্যবসায়ী মোঃ রশিদুস সুলতান বাবলু প্রমুখ।
চেম্বার নেতৃবৃন্দ ব্যবসা হইতে করযোগ্য আয় নিরুপনের ক্ষেত্রে চাকুরি হইতে করযোগ্য আয় এর সহিত বৈষম্য নিরসন, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ৭৩ ধারা মোতাবেক ৩ কোটির পরিবর্তে ২০ কোটি টাকার ওপরে টার্ণওভার নির্ধারণ, ট্রাইব্যুনালে আপীল দায়ের এর ক্ষেত্রে ২% এবং হাইকোর্টে রেফারেন্স মামলার আবেদনের জন্য ৫% থেকে ১০% কর পরিশোধ করা, করদাতার অনুন্য সীমা ১০ (দশ) কোটি এবং ফার্ম বা ব্যক্তি সংঘের ক্ষেত্রে ৩ (তিন) কোটি টাকায় উন্নীতকরণ এবং করহার ০.২০% করা, ব্যক্তি করদাতাদের জীবনের সংশ্লিষ্ট ব্যয়কে আয়কর রিটার্ণ দাখিলে বাধ্যতামূলক না করা, আমদানিকারক ও উৎপাদক পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর ধার্য্য করা, ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশে কর পরিশোধের ব্যবস্থাকরণ, ভ্যাট নিরীক্ষার নামে অহেতুক হয়রানি বন্ধ, সময়ে সময়ে বিভিন্ন এস.আর.ও এর বিপরীতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক ভ্যাটের বিভাগীয় কর্মকর্তা হতে প্রত্যয়ন পত্র ইস্যু করার নামে হয়রানিমূলক কার্যক্রম নিরসনের জোর দাবি জানান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম বলেছেন, কর ও ভ্যাট শব্দটি দীর্ঘদিন ধরে জনমনে যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করেছে তা দূর করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হতে হবে। আমদানি নির্ভরতা, সিজন পরিবর্তন ও সিন্ডিকেটের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও করের বোঝাটাই সবার কাছে মাথা ব্যথার কারণ, এই মানসিকতা থেকে সবাইকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিগত চার বছরে ২১ লাখ থেকে ৩৬ লাখে করদাতা এবং ২ লাখ থেকে ৫ লাখে ভ্যাটদাতা উন্নীতকরণ করা হয়েছে। ধীরে ধীরে করনেট ও ভ্যাটের আওতা বাড়ানো হচ্ছে পাশাপাশি আয়কর ও ভ্যাট প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে রাজস্ব প্রদানের ক্ষেত্রে সবার দায়িত্বশীলতা ও ইতিবাচক মানসিকতা ধারণ করতে হবে।
প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় চেম্বারের বর্তমান ও সাবেক সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি, পরিচালকবৃন্দ, বৃহত্তর রংপুরের ৯টি চেম্বারের নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিবৃন্দ, সুধীজন, কর ও ভ্যাট অফিসের কমৃকর্তাবৃন্দ, বিভাগীয়, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Comments